যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভূত এক ব্যক্তি হামাসকে সহায়তা এবং ভিসা জালিয়াতির অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন। অভিযুক্তের নাম মাহমুদ আমিন ইয়াকুব আল-মুহতাদি। তিনি লুইজিয়ানা অঙ্গরাজ্যের বাসিন্দা।
এফবিআই জানিয়েছে, আল-মুহতাদি ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের নেতৃত্বে সংঘটিত হামলায় সরাসরি অংশ নেন। হামলার সময় তিনি নিজেকে সশস্ত্র করে গাজা উপত্যকা থেকে দক্ষিণ ইসরায়েলে প্রবেশের জন্য একটি দল গঠন করেছিলেন। ওই হামলায় ১ হাজার ২০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হন এবং অন্তত ২৫০ জনকে অপহরণ করা হয়, যাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন ছিলেন মার্কিন নাগরিক।
এফবিআই–এর অপরাধ তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আল-মুহতাদি ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট ফর দ্য লিবারেশন অব প্যালেস্টাইন (DFLP)–এর সামরিক শাখার সদস্য ছিলেন। তিনি কায়রোতে ২০২৪ সালের জুনে ভিসার আবেদন করেন এবং তাতে মিথ্যা তথ্য প্রদান করেন। আবেদনপত্রে তিনি দাবি করেন যে, তিনি কখনো কোনো সশস্ত্র সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না।
ভিসা অনুমোদনের পর তিনি ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেন এবং ওকলাহোমার টালসা শহরে বসবাস শুরু করেন। পরে ২০২৫ সালের জুনে তিনি লুইজিয়ানার লাফায়েত শহরে চলে যান এবং একটি রেস্টুরেন্টে কাজ শুরু করেন।
যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ বলেছে, আল-মুহতাদির বিরুদ্ধে ভিসা জালিয়াতি এবং বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠনকে সহায়তার ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনা হয়েছে। বৃহস্পতিবার তাকে গ্রেফতার করা হয়।
মার্কিন অ্যাটর্নি জেনারেল পাম বন্ডি এক বিবৃতিতে বলেন, “৭ অক্টোবরের ভয়াবহ হামলায় যারা মার্কিন নাগরিকদের হত্যার সঙ্গে জড়িত ছিল, তাদের খুঁজে বের করে বিচারের মুখোমুখি করা আমাদের দায়িত্ব। আমরা সন্ত্রাস ও ইহুদিবিদ্বেষের বিরুদ্ধে দৃঢ়ভাবে অবস্থান নেব।”
লুইজিয়ানার গভর্নর জেফ ল্যান্ড্রি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করে বলেছেন, “বিচার হবে। হয়তো আল-মুহতাদি হবে আমাদের ‘লুইজিয়ানা লকআপ’-এর নতুন বন্দি।”
এফবিআই জানিয়েছে, আল-মুহতাদির সোশ্যাল মিডিয়া ও ইমেইল অ্যাকাউন্টে হামাস–সম্পর্কিত প্রচারণা ও অস্ত্র প্রশিক্ষণের ছবি পাওয়া গেছে। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর সকালে হামাস নেতা মোহাম্মদ দেইফ যখন “জনগণকে যুদ্ধে যোগ দিতে” আহ্বান জানান, তখন আল-মুহতাদি তার সহযোগীদের উদ্দেশ্যে বলেন, “রাইফেল নিয়ে আসো, এটা হবে এক দারুণ খেলা।”
তদন্ত কর্মকর্তারা আরও জানিয়েছেন, হামলার সময় আল-মুহতাদির মোবাইল ফোনের সিগন্যাল ইসরায়েলের কফার আজা গ্রামের কাছে পাওয়া যায়, যেখানে ডজনখানেক মানুষ নিহত হয় এবং অন্তত ১৯ জনকে অপহরণ করা হয়।
বর্তমানে আল-মুহতাদি সেন্ট মার্টিন প্যারিশ কারাগারে আটক রয়েছেন। শুক্রবার সকালে তাকে ফেডারেল আদালতে হাজির করা হয়।
সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস, এনডিটিভি, এফবিআই অফিসিয়াল রিপোর্ট (অক্টোবর ২০২৫)

